মোবাইল ফোন ব্যবহারে শীর্ষে বরিশাল, পিছিয়ে সিলেট
দেশে মোবাইল ব্যবহারকারীর শীর্ষে রয়েছে বরিশাল বিভাগ। আর সিলেট বিভাগে এ হার সর্বনিম্ন। এছাড়া পল্লী অঞ্চলের চেয়ে শহরে মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেশি।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘মনিটরিং দ্য সিচুয়েশন অব ভাইটাল স্ট্যাটিস্টিকস অব বাংলাদেশ ২০২১’ জরিপের ফলাফলে এ জানানো হয়েছে।
জরিপে দেখা গেছে, পাঁচ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সী ৫৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহারকার করেন। পল্লী অঞ্চলের মানুষের তুলনায় শহুরে মানুষের মোবাইল ফোন থাকার প্রবণতা অন্তত ১১ দশমিক ২ শতাংশ বেশি। বরিশাল বিভাগের ৬২ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষের কাছে মোবাইল ফোন দেখা গেছে। সিলেট বিভাগে এ হার সর্বনিম্ন, ৫০ দশমিক ২৬ শতাংশ।
বিবিএস জানায়, মোবাইল ফোন বা সেলফোন বিশ্বব্যাপী অনেক মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণে পরিণত হয়েছে। পরিবার ও ব্যবসায়িক সহযোগীদের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করা এবং ই-মেইল ব্যবহারে সেলফোনের প্রয়োজন হয়, যা এটির ক্রমবর্ধমান গুরুত্ব আরও বাড়িয়েছে। বর্তমান সময়ের প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত মোবাইল ফোনগুলো কেবল ফোনকল গ্রহণ এবং কল প্রদান করতেই সক্ষম নয়, বরং তা ইন্টারনেট ব্যবহার, তথ্য-উপাত্ত সংরক্ষণ, ছবি তোলা, এমনকি ওয়াকিটকি হিসেবেও এগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে।
এসব ফোনে আরও যে সসব সুবিধা রয়েছে এখানে তার সামান্য কয়েকটি বর্ণনা করা হয়েছে মাত্র। মোবাইল ফোন অন্যদের সঙ্গে সংযুক্ত থাকা এবং ব্যবহারকারীকে নিরাপত্তা প্রদান করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। জরুরি পরিস্থিতিতে কারও কাছে একটি মোবাইল ফোন থাকলে তা অন্যদের দ্রুততার কাছে পৌঁছাতে সাহায্য করতে পারে এবং জীবন রক্ষায় সহায়তা করতে পারে। ব্যক্তিগত নিরাপত্তার ঊর্ধ্বে আরও অনেক কিছুতেই মোবাইল ফোনের গুরুত্ব অপরিসীম।
জরিপে আরও দেখা গেছে, সম্প্রতি কোভিড-১৯ বিশ্বব্যাপী শিক্ষাক্ষেত্রে এক বিশাল চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করে। এটি আট মাসেরও বেশি সময় ধরে আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রাকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করে। এটির কারণে বিভিন্ন অফিস-আদালত বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ এবং অসংখ্য শিক্ষার্থী ও পেশাজীবীকে বাড়িতে অবস্থানের পরামর্শ দেওয়া হয়। এমন নজিরবিহীন পরিস্থিতিতে শিক্ষার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মোবাইল ফোনবান্ধব ই-শিক্ষণ ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কোভিড-১৯ সময়কালে মোবাইলের মাধ্যমে শিক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে আবির্ভূত হয়।
জরিপে মোটামুটিভাবে আটটি প্রশাসনিক বিভাগের বাসিন্দাদের মধ্যে সক্রিয় সিম কার্ডসহ একটি মোবাইল ফোনের মালিকানার ক্ষেত্রে তেমন উল্লেখযোগ্য কোনো পার্থক্য লক্ষ করা যায়নি।
এসভিআরএস ২০২১-এ দেখা যায়, প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে (১৫ বছর ও তদূর্ধ্ব) মোবাইল ফোনের ব্যবহার ৭১ দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং পুরুষ ও নারীদের মধ্যে মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে বড় ধরনের ব্যবধান রয়েছে৷ ৷ পল্লী ও শহর উভয় ক্ষেত্রেই এ ব্যবধান পরিলক্ষিত হয়। এমনকি পল্লী জনগোষ্ঠী ও শহুরে জনগোষ্ঠীর মধ্যেও মোবাইল ফোনের মালিকানার আনুপাতিক হারে বড় পার্থক্য দেখা যায়। ঢাকা বিভাগে ৭৭ দশমিক ১৫ শতাংশ মানুষ ফোন ব্যবহার করেন, অন্যদিকে সিলেটে ৬৪ দশমিক ৭৭ শতাংশ মানুষ ফোন ব্যবহার করেন।