মিয়ানমারে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে: জাতিসংঘের রিপোর্ট

মিয়ানমারে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে: জাতিসংঘের রিপোর্ট

মিয়ানমারে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির তদন্তকারীরা প্রমাণ পেয়েছেন যে, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী বেসামরিক নাগরিকদের নির্বিচারে হত্যা করা অব্যাহত রেখেছে। মঙ্গলবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি মিয়ানমারের সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে নতুন করে যুদ্ধাপরাধের এই অভিযোগ আনলো। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।

খবরে জানানো হয়, মিয়ানমার সরকারের যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রমাণ সংগ্রহ করতে ২০১৮ সালে আইআইএমএম নামের একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল জাতিসংঘ। সেই কমিটির দেয়া বার্ষিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, মিয়ানমারের বর্তমান সামরিক সরকার তাদের গণহত্যা ও নির্বিচারে বোমা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এর আগে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দাবি করেছিল যে, তারা শুধু সশস্ত্র বিরোধী দলগুলিকে লক্ষ্য করে অভিযান চালাচ্ছে। কিন্তু জাতিসংঘের প্রতিবেদনে এমন দাবিকে পুরোপুরি মিথ্যা বলে জানানো হয়েছে।
আইআইএমএম-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুরো গ্রাম পুড়িয়ে ফেলা, বেসামরিক বাড়িঘরের ওপর ইচ্ছাকৃতভাবে বোমা হামলা এবং বেসামরিক ও আটক যোদ্ধাদের গণহত্যা চালানো হচ্ছে। এছাড়া যারা এসব গণহত্যার সঙ্গে যুক্ত তাদেরকে বিচারের মুখোমুখিও করা হচ্ছে না। ফলে এটি স্পষ্ট যে, মিয়ানমারের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ যুদ্ধাপরাধ চালিয়ে যেতে আরও উৎসাহিত করছে। ফলে এখন অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহ চলছে এবং আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত ও আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মামলার জন্য ফাইল তৈরি হচ্ছে। 

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক সেনা অভ্যুত্থানে অং সান সুচির নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটি মারাত্মক সহিংসতায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

ভিন্নমত দমনের লক্ষ্যে মিয়ানমারের সেনা সরকার এমন সব রক্তাক্ত অভিযান চালিয়েছে যার জেরে দেশের বিভিন্ন অংশে সেনা শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও সশস্ত্র লড়াই শুরু হয়েছে। আইআইএমএম-এর প্রধান তদন্তকারী নিকোলাস কোমিয়ান বলেন, মিয়ানমারে প্রতিটি প্রাণহানির ঘটনাই দুঃখজনক। কিন্তু বিমান হামলা এবং গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়ার মধ্য দিয়ে পুরো সমাজকে ধ্বংস করার ঘটনা বিশেষভাবে মর্মান্তিক।